ক্লোন ফটোগ্রাফি

আসদাস
আমি এবং আমি


কয়েকদিন আগে ফেসবুকে এই ছবিটা আপলোড করেছিলাম। আমার বাসার দরজার সামনে বসে আমি একটা বই পড়ছি আর আমার দুটো ক্লোনে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। অনেকেই জানতে চাইল, কিভাবে ছবিটা তোলা। ছবিটা আসলেই খুব মজার। আরও মজার ব্যাপার হল, যেকোনো সাধারন মানের “পয়েন্ট এন্ড শুট” ক্যামেরা দিয়েই এমন ছবি তোলা সম্ভব। তাই ভাবলাম আইডিয়াটা সবার সাথে শেয়ার করি।

খুব সহজ একটা উদাহরন দিয়ে শুরু করা যাকঃ

এই ছবিটা আসলে, দুটি ছবির সমন্বয়। ছবিগুলো হচ্ছেঃ

ছবিঃ এক

ছবিঃ দুই


এমন ছবি তোলার ধাপ মূলত দুটিঃ ছবি তোলা এবং ছবি এডিট করা।

ছবি তোলাঃ
আমার মনে হয় ছবি তোলাটাই এক্ষেত্রে আসল চ্যালেঞ্জ। এডিট করাটা অনেক সহজ হয়ে যায়, যদি ছবিগুলো তোলার সময় ক্যামেরা না নড়ে। এজন্য, ট্রাইপড হলে ভাল হয়। ট্রাইপড না থাকলেও সমস্য নাই। টেবিল বা সমতল কোনো জায়গায় ক্যামেরা রেখেও কাজ চালিয়ে নেওয়া যাবে। আর দরকার হবে একজন সহযোগি। তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে ছবি তোলার সময় যেন ক্যামেরা একদমই না নড়ে। ক্যামেরায় কন্টিনিউয়াস শুটিং মুড থাকলে এই কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। এবার চিন্তা করে মোটামুটি একটা গল্প দাঁড় করাতে হবে। সেই গল্প অনুসারে বেশ কিছু ছবি তুলতে হবে। তোলা হয়ে গেলে সেখান থেকেই বাছাই করতে হবে কোন কোন ছবি নিয়ে গল্পটা ভালভাবে ফুটিয়ে তোলা যায়।

ছবি এডিট করাঃ
ছবি এডিট করতে আমি সাধারনত গিম্প ব্যবহার করি। অবশ্য অন্য যেকোনো ইমেজ এডিটিং সফটওয়্যার দিয়েও কাজটা করা যাবে। তোলা ছবি থেকে বাছাই করা যেকোনো একটা ছবিকে ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে ওপেন করতে হবে। এই ক্ষেত্রে “ছবিঃ এক” কে ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। তারপর “ছবিঃ দুই” ওপেন করা হয়েছে। “ছবিঃ দুই” থেকে দরকারি অংশ কপি করে, ব্যাকগ্রাউন্ড এ নতুন লেয়ার ক্রিয়েট করে সেখানে পেষ্ট করা হয়েছে। তারপর কপি করা অংশটুকু দরকার মত সরিয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড এর সাথে মেলানো হয়েছে। তারপর ব্রাশ টুল দিয়ে দুটি ছবির মাঝখানে কিছুটা ঘষামাজা করা হয়েছে যেন বোঝা না যায় এটা আসলে দুটি ছবির সমন্বয়। অনেক সময় কন্ট্রাস্ট বা স্যাচুরেশনও সমন্বয় করার দরকার হতে পারে।

বলে রাখা ভাল, এটা কোনো টিউটেরিয়াল না। গুছিয়ে টিউটেরিয়াল লেখা অনেক কঠিন এবং শ্রমসাধ্য একটা কাজ। আমি যা যা করেছি সেটাই একটূ সহজভাবে সবাইকে জানালাম। তবে কারও আগ্রহ থাকলে, আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন। আমি আমার সাধ্যমত সাহায্য করার চেষ্টা করব। কদিন আগে তোলা আরও দুটি ছবি সবার সাথে শেয়ার করলামঃ

কুমির শিকার
শিরনামহীন

 

42 Replies to “ক্লোন ফটোগ্রাফি”

  1. বেশি জটিল! একবার তো তাহলে ট্রাই করতেই হচ্ছে!

    অনেকের কাছে হয়তো ‘গিম্প’ নামটা অপরিচিত লাগতে পারে। এটা কিন্তু বেশ শক্তিশালী ইমেজ এডিটর। কেউ যদি গিম্প নিয়ে বাংলায় টিউটোরিয়াল পেতে চান, কিংবা গিম্প দিয়ে কী কী করা সম্ভব সেটা নিয়ে যদি কিছু ধারণা পেতে চান তাহলে এখানে ঢুঁ মেরে দেখতে পারেন।

    1. ট্রাই করেন। তারপর আমাগো লগে শেয়ারও কইরেন।
      আপনার লিংকে ঢু মারলাম।দারুনতো!! বেশ কিছু ব্রাশের লিংক পেলাম। অনেক কামে দিব।
      বলতে পারেন গিম্পের অন্ধ ভক্ত আমি। লিংকটা শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

  2. বিষয়টা আসলে খুব মজার, আমিও ট্রাই করিনি। তবে করার ইচ্ছে হচ্ছে, নিজেকে দিয়ে নয়। অন্য কোন মডেল দিয়ে ট্রাই করা যায়। তবে টিউটোরিয়াল লিখলে সহজ হয়ে যাবে পুরো ব্যপারটা। সময় পেলে টিউটোরিয়াল দিয়ে দিব।

  3. ক্লোন ফটোগ্রাফি সম্বন্ধে অনেক আগে থেকেই জানা আছে… তবে কিভাবে করা হয় তা জানতাম না, আপনার লেখা থেকে ব্যাপারটা পরিষ্কার হলো… ধনিয়া পাতা… :mrgreen:

তারেক এর জন্য একটি উত্তর রাখুন জবাব বাতিল