পো’বয় ফেস্টিভল

ক’দিন আগেই হয়ে গেল নিউ অর্লিন্সের বিখ্যাত পো’বয় ফেস্টিভল। পো’বয় হচ্ছে বিশেষ এক ধরনের স্যান্ডউইচ। নানা রকমের পো’বয় আছে, চিকেন-বিফ-চিংরি-পর্ক-ক্যাট ফিশ আরও কত পদ। পো’বয় তৈরির মূল উপকরন ফ্রেঞ্চ ব্রেড। এটা সাধারনত দুই ফিট লম্বা বিশেষ ধরনের ব্রেড। এই ব্রেডের বাইরের আবরন হয় অনেক মচমচে আর ভেতরের অংশটা  মোলায়েম। ব্রেডের মাঝ বরাবর কেটে তার ভেতরে কিছু সস, সবজি আর চিকেন/বিফ/চিংরি/পর্ক দিলেই হয়ে গেল পো’বয়। এটা নিউ অর্লিন্সের সবচে জনপ্রিয় খাবার। নিউ অর্লিন্সকে বলা হয় “ইউনিক সিটি”; যে শহরে একটা স্যান্ডউইচ নিয়ে পুরো একটা উৎসব হয়, সেই শহরকে ইউনিক না বলে উপায় আছে?

ফ্রেঞ্চ ব্রেড সাথে কিছু সবজি


পো’বয় নামটা যখন প্রথম শুনি খুব অদ্ভুত লেগেছিল। পরে অবশ্য নামের ইতিহাস শুনে আর অতটা অদ্ভুত লাগেনি। পো’বয় শব্দটা এসেছে পুওর বয় (poor boy) শব্দ থেকে।  ১৯২৯ সালে নিউ অর্লিন্সের স্ট্রিট’কার কোম্পানির বিরুদ্ধে চালকদের চারমাসের ধর্মঘট চলছিল। এই সময় মার্টিন (সে নিজেও একসময় ছিল স্ট্রিটকার চালক) নামের এক রেস্টুরেন্ট মালিক তার পুরনো সাহকর্মীদের বিনামুল্যে এই স্যান্ডউইচ দিত।মার্টিনের রেস্টুরেন্টের বয়-বেয়ারারা মজা করে ওদেরকে বলত পুওর বয়, একসময় দেখতে দেখতে স্যান্ডউইচের নামই হয়ে গেল পুওর বয় স্যান্ডউইচ, তারপর একসময় পো’বয়।

দেখতে দেখতে দিন ঘনিয়ে আসল। একদিনের উৎসব। দুপুরের দিকে গিয়ে হাজির হলাম। গিয়ে দেখি এলাহী কারবার। হাজার হাজার মানুষ গিজগিজ করছে। একজায়গায় এত মানুষ আমি আমেরিকায় আসার পর আর কোথাও দেখিনি।

পো'বয় ফেস্টিভলে মানুষের ঢল

কত যে পো’বয় এর স্টল তার হিসাব নাই। প্রায় সাব স্টলেই বিশাল লাইন। আমরাও লাইনে দাড়ালাম। আমি অবশ্য এই ফাকে কিছু পোবয়ের ছবি তুলে ফেললাম।

চিংড়ি পো'বয়
পর্ক পো'বয়

 

পর্ক পো'বয় সাথে ব্রেড পুডিং
বিফ পো'বয়
চিংরি পো'বয় স্টল
ব্যাস্ত পো'বয় বয়
গ্রিলিং চলছে...
সাথে ছিল রঙ্গিলা মাফিন

নিউ অর্লিন্সে একটা উৎসব হচ্ছে আর  মিউজিক থাকবে না, তা কি হয়? খাওয়ার পাশাপাশি চলছে নাচ-গান।

নাচ-গান ১
নাচ-গান ২
নাচ-গান ৩
নাচ-গান ৪

 

নাচ-গান-৫

পো’বয় কে মনে করা হয় নিউ অর্লিন্সের সংস্কৃতির অপরিহার্য অংশ।যতদিন নিউ অর্লিন্স আছে, ততদিন এই পো’বয়ও থাকবে, আর হয়তো এই ফেস্টিভলও থাকবে।

 

7 Replies to “পো’বয় ফেস্টিভল”

  1. তৌফিক ভাই, পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগল। পো’বয় ফেস্টিভল সম্পর্কে আগে কোনো ধারণা ছিল না। এমন কি পো’বয় স্যান্ডউইচ সম্পর্কেও। খাবারের ছবিগুলো দেখে লোভ লেগে গেল 😛 । সাদা কালো ও প্রায় সাদা রঙীন ছবি দুইটি অসাধারণ সুন্দর লেগেছে। অবশ্য সবগুলো ছবিই সুন্দর। বিলম্বিত ঈদ মোবারক। শুভেচ্ছা 🙂

    1. পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। খাবারের ছবি দেইখা লোভ কইরেন না রে ভাই। বাংলাদেশের “গরুর মাংস দিয়ে পোলাও বা ভুনা খিচুরির” সাথে এই খাবারের কোনো তুলনাই হয় না।

      আপনাকেও ঈদ মোবারক। ভাল থাকবেন।

  2. স্যান্ডউইচ ভালোই লাগে, কিন্তু “না খাইলে পরান কান্দে” টাইপের না! 😛 পোস্টটা উপাদেয়, আর সাইড ডিশ হিসেবে ছবি দেয়াতে বেশ সুস্বাদু হয়েছে পড়তে … 😀

maq এর জন্য একটি উত্তর রাখুন জবাব বাতিল